রফিকুল ইসলাম রফিক
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায়, বিষধর সাপের কামড়ে ফিরোজা খাতুন (৪৫) নামে, এক গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২২ জুন) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বিক্রিবিল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ফিরোজা খাতুন ওই এলাকার ফেরদৌস আলীর স্ত্রী ও চার মেয়েসন্তানের জননী। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের নির্জনে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের বাইরে বের হয়েছিলেন ফিরোজা। এ সময় অন্ধকারে একটি বিষধর সাপ এসে তাকে পায়ে দংশন করে।
ঘটনার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজন ও প্রতিবেশীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরমান আলী বলেন, “সাপে কাটা অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলেও ফিরোজা খাতুনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই অঞ্চলে বর্ষাকালে প্রায়ই সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়, কিন্তু চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সীমিত।”
এদিকে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “সাপের কামড়ে একজন নারীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনায় পরিবারটির পাশাপাশি পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।”
তিনি আরও জানান, রবিবার বিকেলে স্থানীয় কবরস্থানে জানাজা শেষে মরহুমার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সীমান্তঘেঁষা রৌমারী উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে সাপের কামড়ের ঘটনা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ঘাটতির কারণেই অনেক সময় এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের মধ্যে এখন বাড়তি উদ্বেগ কাজ করছে।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, সাপে কাটা রোগীর জন্য দ্রতগতির চিকিৎসা, বিশেষত অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু অনেক সময় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রোগী মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন বা মৃত্যু ঘটে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রত্যন্ত এলাকায় সাপে কাটা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচার, অ্যান্টিভেনম মজুদ এবং প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন