ঢাকা ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্রীমঙ্গলে রূপা সবর নিখোঁজ: পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও মামলার বিবরণে নতুন মোড় ৩৩ বছর পর ধ্বংসের দিনেই নির্মিত হচ্ছে বাবরি মসজিদ মাগুরায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত আহত  নোয়াখালীর চৌমুহনীতে যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী চিংড়ি পলাশ আটক। সত্যের সংকটে সাংবাদিকতা’  বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ কোন পথে ? পঞ্চগড়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কলম যখন পথ হারায় তখন সত্যের সংকটে একজন বিকৃত সাংবাদিক ১০ সন্ত্রাসের সমান ভয়ংকর রূপ ধারণ ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ। বরিশালে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায়, যুবদল নেতা কে মারধর

সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির এ.এস.আইয়ের ৩ সন্তানসহ দুই স্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির এ.এস.আইয়ের ৩ সন্তানসহ দুই স্ত্রী

মাহমুদুল হাসান
বার্তা সম্পাদকঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানায় কর্মরত এ.এস.আই শেখ সাদীর বিরুদ্ধে স্ত্রী সন্তানদের ভরণপোষন না দেয়াসহ সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা ও তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী ঢাকা পুলিশের এসবিতে কর্মরত কবিতা আক্তার। গত ২৮ জুলাই ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা থেকে এসে তানিয়া সুলতানা এবং ঢাকার উত্তরখান থেকে কবিতা আক্তার স্বশরীরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পৃথক অভিযোগ দেন। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানদের ভরণ পোষন ও পিতৃ পরিচয়ের দাবী নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরের একটি গাছের নীচে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এ.এস.আই শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা ও তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী কবিতা আক্তার। তাদের সাথে রয়েছেন ওই সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। শেখ সাদী বর্তমানে জেলার বিজয়নগর থানায় কর্মরত রয়েছেন। বাবার স্নেহ বঞ্চিত এই সন্তানদের চোখে মুখে যেনো হতাশার ছাপ। বাবা থেকেও যেনো নেই। রাখেন না কোনো যোগাযোগ। দেয়না কোনো ভরণ পোষণ। এমনকি এক সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয় নিয়েও তুলেছে প্রশ্ন। এ অবস্থায় সামাজিক বঞ্চনা আর দুঃখে কষ্টে দিন কাটছে পরিবারগুলোর।
শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রীর দেয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে তানিয়া সুলতানার সাথে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ করেন, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার হরিনগর গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে শেখ সাদী। সাদী ঢাকার একটি গার্মেন্টসে সুপারভাইজার এর চাকুরী করাকালে ২০০৮ সালে কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই গার্মেন্টসে কর্মরত পারভীন নামের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। দ্বিতীয় বিবাহের পর সে প্রথম স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ের ভরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে প্রথম স্ত্রীর মামলায় আদালতের রায়ে শেখ সাদী তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া ও ছেলে মেয়েকে ভরণ পোষণ দেয়ার কথা। কিন্তু সাদী কাউকে কিছু না জানিয়ে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬ বছর পর ২০১৫ সালের দিকে তানিয়া শেখ সাদীর চাচাতো ভাইয়ের মাধ্যমে খবর পান কবিতা আক্তার নামে এক পুলিশ সদস্যকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছে সাদী। পরে তানিয়া জানতে পারেন সাদী রাজারবাগ থানায় রযেছে। পরবর্তীতে শালিসের মাধ্যমে সে বছর খানেক ভরণ পোষন দিলেও পরবর্তীতে আর কোনো খোঁজখবর নেয় না। এ অবস্থায় অনার্স পড়ূয়া মেয়ে ও সদ্য এসএসসি পাশ করা ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অসহায় দিন কাটছে তানিয়ার।
শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বলেন, আমি আমার ও সন্তানদের অধিকারের দাবীতে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছি। আমি আশা করি ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আমি এবং আমার দুই সন্তানের অধিকার নিশ্চিত হবে।
প্রথম স্ত্রীর মেয়ে শেখ স্নিগ্ধা ও ছেলে শেখ সিয়াম বলেন, আমাদের মায়ের কাছ থেকে শুনেছি বাবা যেখানে বদলী হয়, সেখানে বিয়ে করেন। আমাদের ভরণ পোষন দেয়না এবং খোঁজ খবর নেন না। বাবার আদর থেকে আমরা বঞ্চিত। যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আমাদের ফোন নাম্বার ব্লগ করে দেন। আমাদের একটাই চাওয়া বাবার অধিকার যেন পাই।

এদিকে এ.এস.আই শেখ সাদীর তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী ঢাকা পুলিশের এসবিতে কর্মরত কবিতা আক্তারের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালে মিরপুরে তৎকালীন কনস্টেবল শেখ সাদীর সাথে তার পরিচয় হয়। ২০১২ সালের ২৭ অক্টোবর মিরপুর কাজী অফিসে তাদের বিবাহের কাবিননামা সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ের আগে শেখ সাদী কবিতা আক্তারের কাছ থেকে দুটি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। তবে কবিতা যখন দুই মাসের গর্ভবতী তখন তিনি জানতে পারেন শেখ সাদীর পূর্বের দুই স্ত্রী রয়েছে। ২০১৪ সালে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল বিন সাদী নামে এক ছেলে সন্তান হয়। ২০১৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পুলিশ সুপারের বডিগার্ড হিসেবে বদলী হলে সেখানে এক মহিলা কনস্টেবলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে কবিতা আক্তার মিশনে মালিতে চলে যান। এরমধ্যে স্বামী শেখ সাদী এ.এস.আই পদে পদোন্নতি পান। ২০২১ সালে কবিতা আক্তার মিশন থেকে ছুটিতে দেশে আসে। তবে স্বামী শেখ সাদী কবিতা আক্তারের বিরুদ্ধে মিশনে থাকা অবস্থায় অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলেন। এনিয়ে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তালাক হয়। বর্তমানে সে তার সন্তান শেখ মোহাম্মদ আব্দুল বিন সাদ কে অস্বীকার করে তার ভরণ পোষণ দিচ্ছে না। এ অবস্থায় তিনি তার সন্তানের বৈধতা দাবী করে তার ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তর দাবী জানান। এছাড়াও অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় এ.এস.আই শেখ সাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফারজানা নামের আরো এক মেয়েকে বিবাহ করেছে। ইতিমধ্যে সাদী বিজয়নগর থানায় বদলী হয়েছে। তবে তার ৪র্থ স্ত্রী বিভিন্ন সময় ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকী দিয়ে থাকে। এ অবস্থায় কবিতা এ.এস.আই শেখ সাদীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী কবিতা আক্তার বলেন, সাদীর সাথে আমার তালাক হয়েছে। কিন্তু সন্তানের ভরণ পোষন সে দেয়ার কথা। সে কোনো যোগযোগ রাখছে না। আমার মনে একটাই কষ্ট সে আমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার নিজের ছেলেকে অস্বীকার করছে। বিয়ে করাই যেন তার নেশা হয়ে গেছে। আমি আশা করি আমরা ন্যায় বিচার পাবো। আর কেউ যাতে এমন প্রতারণা করার সুযোগ না পায় এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। সে সাথে সন্তানদের ভরণ পোষন ও পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত হবে।
তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রীর ছেলে শেখ মোহাম্মদ আব্দল্লাহ্ বিন সাদী বলেন, মায়ের আদর যত্নে বড় হচ্ছি। অনেক সময় স্কুলে গেলে বন্ধুদের বাবাদের দেখে অনেক কষ্ট লাগে। তখন মনে হয় বাবা থেকেও যেন নেই। আমি আমার বাবার পিতৃ পরিচয় চাই।
এ বিষয়ে জানতে এ.এস.আই শেখ সাদীর মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এসে আপনার সাথে দেখা করবো
পুলিশ সুপার মোঃ এহতেশামুল হক বলেন, এ.এস.আই শেখ মোঃ সাদীর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ এসেছে। এসব ঘটনার অনুসন্ধান চলছে। সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির এ.এস.আইয়ের ৩ সন্তানসহ দুই স্ত্রী

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির এ.এস.আইয়ের ৩ সন্তানসহ দুই স্ত্রী

মাহমুদুল হাসান
বার্তা সম্পাদকঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানায় কর্মরত এ.এস.আই শেখ সাদীর বিরুদ্ধে স্ত্রী সন্তানদের ভরণপোষন না দেয়াসহ সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা ও তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী ঢাকা পুলিশের এসবিতে কর্মরত কবিতা আক্তার। গত ২৮ জুলাই ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা থেকে এসে তানিয়া সুলতানা এবং ঢাকার উত্তরখান থেকে কবিতা আক্তার স্বশরীরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পৃথক অভিযোগ দেন। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানদের ভরণ পোষন ও পিতৃ পরিচয়ের দাবী নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরের একটি গাছের নীচে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এ.এস.আই শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা ও তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী কবিতা আক্তার। তাদের সাথে রয়েছেন ওই সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। শেখ সাদী বর্তমানে জেলার বিজয়নগর থানায় কর্মরত রয়েছেন। বাবার স্নেহ বঞ্চিত এই সন্তানদের চোখে মুখে যেনো হতাশার ছাপ। বাবা থেকেও যেনো নেই। রাখেন না কোনো যোগাযোগ। দেয়না কোনো ভরণ পোষণ। এমনকি এক সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয় নিয়েও তুলেছে প্রশ্ন। এ অবস্থায় সামাজিক বঞ্চনা আর দুঃখে কষ্টে দিন কাটছে পরিবারগুলোর।
শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রীর দেয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে তানিয়া সুলতানার সাথে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ করেন, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার হরিনগর গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে শেখ সাদী। সাদী ঢাকার একটি গার্মেন্টসে সুপারভাইজার এর চাকুরী করাকালে ২০০৮ সালে কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই গার্মেন্টসে কর্মরত পারভীন নামের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। দ্বিতীয় বিবাহের পর সে প্রথম স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ের ভরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে প্রথম স্ত্রীর মামলায় আদালতের রায়ে শেখ সাদী তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া ও ছেলে মেয়েকে ভরণ পোষণ দেয়ার কথা। কিন্তু সাদী কাউকে কিছু না জানিয়ে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬ বছর পর ২০১৫ সালের দিকে তানিয়া শেখ সাদীর চাচাতো ভাইয়ের মাধ্যমে খবর পান কবিতা আক্তার নামে এক পুলিশ সদস্যকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছে সাদী। পরে তানিয়া জানতে পারেন সাদী রাজারবাগ থানায় রযেছে। পরবর্তীতে শালিসের মাধ্যমে সে বছর খানেক ভরণ পোষন দিলেও পরবর্তীতে আর কোনো খোঁজখবর নেয় না। এ অবস্থায় অনার্স পড়ূয়া মেয়ে ও সদ্য এসএসসি পাশ করা ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অসহায় দিন কাটছে তানিয়ার।
শেখ সাদীর প্রথম স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বলেন, আমি আমার ও সন্তানদের অধিকারের দাবীতে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছি। আমি আশা করি ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আমি এবং আমার দুই সন্তানের অধিকার নিশ্চিত হবে।
প্রথম স্ত্রীর মেয়ে শেখ স্নিগ্ধা ও ছেলে শেখ সিয়াম বলেন, আমাদের মায়ের কাছ থেকে শুনেছি বাবা যেখানে বদলী হয়, সেখানে বিয়ে করেন। আমাদের ভরণ পোষন দেয়না এবং খোঁজ খবর নেন না। বাবার আদর থেকে আমরা বঞ্চিত। যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আমাদের ফোন নাম্বার ব্লগ করে দেন। আমাদের একটাই চাওয়া বাবার অধিকার যেন পাই।

এদিকে এ.এস.আই শেখ সাদীর তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী ঢাকা পুলিশের এসবিতে কর্মরত কবিতা আক্তারের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালে মিরপুরে তৎকালীন কনস্টেবল শেখ সাদীর সাথে তার পরিচয় হয়। ২০১২ সালের ২৭ অক্টোবর মিরপুর কাজী অফিসে তাদের বিবাহের কাবিননামা সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ের আগে শেখ সাদী কবিতা আক্তারের কাছ থেকে দুটি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। তবে কবিতা যখন দুই মাসের গর্ভবতী তখন তিনি জানতে পারেন শেখ সাদীর পূর্বের দুই স্ত্রী রয়েছে। ২০১৪ সালে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল বিন সাদী নামে এক ছেলে সন্তান হয়। ২০১৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পুলিশ সুপারের বডিগার্ড হিসেবে বদলী হলে সেখানে এক মহিলা কনস্টেবলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে কবিতা আক্তার মিশনে মালিতে চলে যান। এরমধ্যে স্বামী শেখ সাদী এ.এস.আই পদে পদোন্নতি পান। ২০২১ সালে কবিতা আক্তার মিশন থেকে ছুটিতে দেশে আসে। তবে স্বামী শেখ সাদী কবিতা আক্তারের বিরুদ্ধে মিশনে থাকা অবস্থায় অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলেন। এনিয়ে বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তালাক হয়। বর্তমানে সে তার সন্তান শেখ মোহাম্মদ আব্দুল বিন সাদ কে অস্বীকার করে তার ভরণ পোষণ দিচ্ছে না। এ অবস্থায় তিনি তার সন্তানের বৈধতা দাবী করে তার ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তর দাবী জানান। এছাড়াও অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় এ.এস.আই শেখ সাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফারজানা নামের আরো এক মেয়েকে বিবাহ করেছে। ইতিমধ্যে সাদী বিজয়নগর থানায় বদলী হয়েছে। তবে তার ৪র্থ স্ত্রী বিভিন্ন সময় ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকী দিয়ে থাকে। এ অবস্থায় কবিতা এ.এস.আই শেখ সাদীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রী কবিতা আক্তার বলেন, সাদীর সাথে আমার তালাক হয়েছে। কিন্তু সন্তানের ভরণ পোষন সে দেয়ার কথা। সে কোনো যোগযোগ রাখছে না। আমার মনে একটাই কষ্ট সে আমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার নিজের ছেলেকে অস্বীকার করছে। বিয়ে করাই যেন তার নেশা হয়ে গেছে। আমি আশা করি আমরা ন্যায় বিচার পাবো। আর কেউ যাতে এমন প্রতারণা করার সুযোগ না পায় এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। সে সাথে সন্তানদের ভরণ পোষন ও পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত হবে।
তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রীর ছেলে শেখ মোহাম্মদ আব্দল্লাহ্ বিন সাদী বলেন, মায়ের আদর যত্নে বড় হচ্ছি। অনেক সময় স্কুলে গেলে বন্ধুদের বাবাদের দেখে অনেক কষ্ট লাগে। তখন মনে হয় বাবা থেকেও যেন নেই। আমি আমার বাবার পিতৃ পরিচয় চাই।
এ বিষয়ে জানতে এ.এস.আই শেখ সাদীর মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এসে আপনার সাথে দেখা করবো
পুলিশ সুপার মোঃ এহতেশামুল হক বলেন, এ.এস.আই শেখ মোঃ সাদীর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ এসেছে। এসব ঘটনার অনুসন্ধান চলছে। সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।