ফকিরহাটে ৩ বিঘা ঘেরে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা
- আপডেট সময় : ০৯:০০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১২৪ বার পড়া হয়েছে

ফকিরহাটে ৩ বিঘা ঘেরে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা
আজিজুল গাজী স্টাফ রিপোর্টর
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় ঘটেছে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে একটি মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধনের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার গভীর রাতে সংঘটিত এ ঘটনায় প্রায় ৩ বিঘা আয়তনের ঘেরে থাকা সব চিংড়ি মাছ মরে গেছে। আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বলে দাবি করেছেন ঘের মালিক।
ভুক্তভোগী কৃষক শেখ কামরুজ্জামান জানান,
“আমি দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করছি। এই ঘেরটি ছিল আমার জীবনের সবকিছু। এতে প্রচুর পরিমাণে চিংড়ি ছিল। গতকাল রাতে সব ঠিকঠাক ছিল, সকালে গিয়ে দেখি পানির ওপরে মাছ ভেসে আছে, পানিতে গন্ধ ছড়াচ্ছে। পরে বুঝতে পারি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘেরে বিষ দিয়েছে। সব শেষ—আমার বছরের পর বছর পরিশ্রম এক রাতেই শেষ হয়ে গেল।”
তিনি আরও বলেন,
“ঘেরের সমস্ত মাছ বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বাজারে দামও ভালো ছিল। এই ক্ষতি আমি কোনোভাবেই পুষিয়ে নিতে পারব না। পরিবার চালানোই এখন কষ্টকর হয়ে পড়বে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাত কেউ ঘেরে বিষাক্ত পদার্থ ছিটিয়ে দেয়। সকালে ঘেরের পানিতে প্রচুর মৃত মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানায়।
স্থানীয়দের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে কেউ পরিকল্পিতভাবে ঘেরে বিষ প্রয়োগ করেছে। কেউ কেউ বলছেন, সাম্প্রতিক একটি জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেও এ ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ফকিরহাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান,
“ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘেরের পানি ও মৃত মাছের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি নাশকতামূলক ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে শেখ কামরুজ্জামান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তার পরিবারের সদস্যরাও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় সমাজসেবক বলেন,
“এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কামরুল একজন পরিশ্রমী মানুষ। তার ঘেরের মাছ এভাবে নষ্ট করে দেওয়া মানে একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা। প্রশাসনের উচিত দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।”
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন যেন এমন নাশকতামূলক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিষ প্রয়োগকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি ও শাস্তি কার্যকর করে।






















