ঢাকা ১২:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোকেয়া দিবসের মেলা কমিটিতে অভিজ্ঞদের বাদ দিয়ে কৃষক দলের নাম ব্যবহার করে বিতর্ক চলছে জনসাধারণের দাবি। মাগুরায় মাশরুম চাষির বাড়িতে ঢাকার অতিরিক্ত সচিব পরিদর্শন  অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতির পদ স্থগিত ও বহিষ্কার দিনাজপুরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় মাগুরায় একই রাতে দুই সরকারি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাগুরা শ্রীপুরে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও আলোচনা সভা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা  দক্ষিণ সুন্দরপুর পাঁচপুকুরিয়া ইসলামিয়া গাউছিয়া নূরানী হ হেফজখান ও এতিমখানা মাদ্রাসার উদ্যোগে বার্ষিক মাহফিল অনুষ্ঠিত। মাগুরায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আন্তঃ  কলেজ ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন  পঞ্চগড়ে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস—অভিযুক্ত প্রত্যাশা কোচিং সেন্টারের পরিচালক 

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতির পদ স্থগিত ও বহিষ্কার

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
দুর্নীতি তালাশ নিউজ টিভি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড, নারী হয়রানি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি হাফেজ মো. নুরুল্লাহকে পদ থেকে স্থগিত করার পর শেষ পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কার করেছে জামায়াত।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে এক অচেনা নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও কলের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় শিক্ষকতা করার সময় এক ছাত্রের মায়ের (প্রবাসীর স্ত্রী) মোবাইলে নিয়মিত কুপ্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই ছাত্রের স্বজনরা নুরুল্লাহকে আটক করে মারধর করেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও ঘটনার ভিডিও ও জবানবন্দির কিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবার ভাইরাল হয়ে যায়।

 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নুরুল্লাহ নিজেকে কখনো ইসলামিক বক্তা, কখনো সাংবাদিক—এমনকি বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মো. ফিরুজ আলম নুরুল্লাহ’ নামে আরেকটি পরিচয় পাওয়া গেলে একাধিক ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগও সামনে আসে।

ঘটনার পর ৩ ডিসেম্বর বরিশাল–ভিত্তিক আঞ্চলিক দৈনিক আমাদের বরিশাল–এর সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নুরুল্লাহকে তাদের রিপোর্টার তালিকা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এতে তার সাংবাদিক পরিচয়ও আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হয়ে যায়।

 

এদিকে একের পর এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও উপজেলা জামায়াত যৌথভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে নারী হয়রানি, নৈতিক অসঙ্গতি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়গুলো প্রমাণিত হলে তাকে প্রথমে রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতির পদ থেকে স্থগিত করা হয়।

 

ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরিদুল হক জানান, “জামায়াতে ইসলামী নৈতিকতা ও শৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তার পদ স্থগিত করা হয়েছে।” পরে বিষয়টি আরও বড় আকারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীলরা জরুরি বৈঠকে নুরুল্লাহকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, “অনৈতিক আচরণের অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়টি পর্যালোচনা করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” তবে তিনি দাবি করেন, মাদরাসাকেন্দ্রিক কিছু ব্যক্তিগত বিবাদের কারণে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটনাগুলো প্রচার করেছে এবং নুরুল্লাহকে মারধর করেছে।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাফেজ নুরুল্লাহর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতির পদ স্থগিত ও বহিষ্কার

আপডেট সময় : ০৮:৪১:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড, নারী হয়রানি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি হাফেজ মো. নুরুল্লাহকে পদ থেকে স্থগিত করার পর শেষ পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কার করেছে জামায়াত।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে এক অচেনা নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও কলের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় শিক্ষকতা করার সময় এক ছাত্রের মায়ের (প্রবাসীর স্ত্রী) মোবাইলে নিয়মিত কুপ্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই ছাত্রের স্বজনরা নুরুল্লাহকে আটক করে মারধর করেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও ঘটনার ভিডিও ও জবানবন্দির কিছু অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবার ভাইরাল হয়ে যায়।

 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নুরুল্লাহ নিজেকে কখনো ইসলামিক বক্তা, কখনো সাংবাদিক—এমনকি বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি হিসেবেও পরিচয় দিতেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মো. ফিরুজ আলম নুরুল্লাহ’ নামে আরেকটি পরিচয় পাওয়া গেলে একাধিক ভুয়া পরিচয় ব্যবহারের অভিযোগও সামনে আসে।

ঘটনার পর ৩ ডিসেম্বর বরিশাল–ভিত্তিক আঞ্চলিক দৈনিক আমাদের বরিশাল–এর সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নুরুল্লাহকে তাদের রিপোর্টার তালিকা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এতে তার সাংবাদিক পরিচয়ও আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হয়ে যায়।

 

এদিকে একের পর এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ও উপজেলা জামায়াত যৌথভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে নারী হয়রানি, নৈতিক অসঙ্গতি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়গুলো প্রমাণিত হলে তাকে প্রথমে রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতির পদ থেকে স্থগিত করা হয়।

 

ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরিদুল হক জানান, “জামায়াতে ইসলামী নৈতিকতা ও শৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তার পদ স্থগিত করা হয়েছে।” পরে বিষয়টি আরও বড় আকারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীলরা জরুরি বৈঠকে নুরুল্লাহকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, “অনৈতিক আচরণের অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়টি পর্যালোচনা করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” তবে তিনি দাবি করেন, মাদরাসাকেন্দ্রিক কিছু ব্যক্তিগত বিবাদের কারণে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটনাগুলো প্রচার করেছে এবং নুরুল্লাহকে মারধর করেছে।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাফেজ নুরুল্লাহর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।