শ্রীমঙ্গলে রূপা সবর নিখোঁজ: পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও মামলার বিবরণে নতুন মোড়
- আপডেট সময় : ১০:২৮:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৭ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গলের রাজঘাট ইউনিয়নের উদনাছড়া মোগলাম বস্তির চা শ্রমিক রূপা সবর (১৮) নিখোঁজের ঘটনাটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে স্বামীপক্ষের পাল্টা অভিযোগ ও মামলার বিস্তারিত যুক্ত হওয়ায়। প্রায় দেড় মাস ধরে রূপার কোনো খোঁজ না মেলায় স্থানীয়দের মাঝে নানা জল্পনা–কল্পনা চলছে।
স্বামী শয়ন পট্টনায়কের অভিযোগ: “রূপাকে তার বাবাই ভারতে লুকিয়ে রেখেছে”
শয়ন পট্টনায়ক দাবি করেন—
“রূপাকে তার বাবা নন্দ সবর ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছে। গ্রামের লোকজন দেখেছে রূপা সকালে তাদের ঘরে ঢুকছে। জিজ্ঞাসা করলে তারা দেখার কথাও স্বীকার করেছে।”
রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
শয়ন বলেন—
“নন্দ সবর রূপা ও আমার মা–কে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেছে এবং সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে।”
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করেন।
মামলার তথ্য যুক্ত হলো — অভিযোগকারী নয়ন পট্টনায়ক
রূপার নিখোঁজ নিয়ে এবার শয়নের ভাই নয়ন পট্টনায়ক আনুষ্ঠানিক মামলা করেছেন।
মামলার তারিখ ও সময় (মামলায় উল্লেখিত):
ঘটনার তারিখ: ১৪-১১-২০২৫
সময়: সকাল ১১:০০টা থেকে ০৯:০০টা পর্যন্ত
স্থান: রাজঘাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নয়নের বাড়ি ঘিরে সংঘটিত ঘটনা
মামলায় নয়নের অভিযোগ:
তার স্ত্রীকে ভারতে পাচার করার চেষ্টা চালিয়েছে একটি চক্র।
এই চক্রে জড়িত বলে তিনি উল্লেখ করেছেন—
মিঠুন তেলেঙ্গা, উদয় সাঁওতাল, সুমন ভুঁইয়া ও নন্দ সবর।
তাদের বিরুদ্ধে নয়নের বাড়িতে হামলা, চুল টানা, মারধর, কাপড় ছিঁড়ে ফেলা, শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
নয়ন দাবি করেন—
“ওরা ৫,০০০ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর চালিয়েছে।”
মামলায় আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তার স্ত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের ভেতরে পাচারের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে চলছে।
উদ্ধারের দুই দিন পর আবার নিখোঁজ
রূপা ও তার শাশুড়িকে রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে উদ্ধার হওয়ার দুই দিন পর রূপা আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসে।
কিছুদিন পর হঠাৎ করেই বাবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়—এমন দাবি স্বামীপক্ষের।
রূপার পরিবারের দাবি ভিন্ন
রূপার বাবা নন্দ সবর বলেন—
“শয়ন প্রতিদিন রূপাকে মারধর করত। আমাদের সন্দেহ, শয়নই রূপাকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে।”
এলাকাবাসী বিভক্ত
কিছু বাসিন্দা শয়নের বক্তব্য সমর্থন করে জানান—রূপাকে নন্দ সবরের বাড়ির আশপাশে কয়েকবার দেখা গেছে।
অন্যদিকে রূপার পরিবার মনে করছে, রূপা নির্যাতনের কারণে আর বেঁচে নেই।
ইউপি সদস্য জয়দেব ঘোষ বলেন
“দুই পক্ষই বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। নন্দ সবর থানায় অভিযোগ দিয়েছে। শয়নকে জিডি করতে বলেছি। পুলিশ তিন দিনের সময় দিয়েছে খুঁজে বের করার জন্য। একটি মেয়ের এতদিন নিখোঁজ থাকা স্বাভাবিক নয়।”
পুলিশ জানিয়েছে
দুই পক্ষের মামলা, অভিযোগ, ভিডিও, প্রত্যক্ষদর্শীসহ সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রূপা জীবিত নাকি কোনো অপরাধের শিকার—সব বিষয়েই তদন্ত চলছে।
























