দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক চঞ্চল্যকর সুলতানা আক্তার রত্না হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেফতার।
মোঃ শহিদুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক।
দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক চাঞ্চল্যকর সুলতানা আক্তার রত্না হত্যা মামলার মূল রহস্য ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে উদঘাটন; হত্যাকান্ডে জড়িত মূল আসামী গ্রেফতার ও আসামী কর্তৃক স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান। তারিখ-৩১/০৭/২০২৫ খ্রি.
গত ইং ৩০/০৭/২০২৫ সকাল অনুমান ০৬.৪৫ ঘটিকার পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানাধীন সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মাঝপাড়া দহলা খাগড়াবাড়ী গ্রামস্থ একটি ধান ক্ষেতে একজন তরুণীর মৃতদেহ উপুর হয়ে পরে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন দেবীগঞ্জ থানা পুলিশকে সংবাদ প্রদান করে। সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তরুণীর লাশ উদ্ধারপূর্বক নাম-ঠিকানা যাচাই করে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে পোস্ট মর্টেমে প্রেরণপূর্বক প্রাথমিক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামী সনাক্ত ও গ্রেফতারসহ মামলার রহস্য উদঘাটনে তৎপর থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা রবিউল ইসলাম থানায় হাজির হয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামী/ আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করলে দেবীগঞ্জ থানার মামলা নং-২৭/১৬১,তারিখ-৩১/০৭/২০২৫ খ্রি. ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করা হয়।
পঞ্চগড় জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ সুপার (দেবীগঞ্জ সার্কেল) জনাব স্যামূয়েল সাংমা এর প্রত্যক্ষ তদারকিতে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জনাব প্রবীর চন্দ্র সরকার এর নেতৃত্বে দেবীগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম নিবিড় তদন্ত ও তথ্য প্রযু্ক্তির সহায়তায় উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ডিসিস্ট সুলতানা আক্তার ওরফে রত্না (২০) এর প্রেমিক মহাদেব রায়(৩০), পিতা-খোকা বর্মণ ,গ্রাম- উপেন চৌকি ভাজনী পুন্ডিপাড়া (৩ নং দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন)) , উপজেলা/থানা- দেবীগঞ্জ, জেলা –পঞ্চগড়কে গত-৩১/০৭/২০২৫ খ্রিঃ সময় ০০.৩০ ঘটিকায় তার নিজ বসত বাড়ী হতে গ্রেফতারপূর্বক পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। মহাদেব রায়কে থানা হেফাজতে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ডিসিস্ট সুলতানা আক্তার রত্না (২০) কে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বেচ্ছায় জবানবন্দি প্রদানে ইচ্ছা পোষণ করেন। অদ্য-৩১/০৭/২০২৫ইং তারিখ মহাদেব রায়(৩০) ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে নিজেকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মহাদেব রায় এর সাথে ডিসিস্ট সুলতানা আক্তার রত্নার দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং উক্ত আসামী বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে ডিসিস্টের সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী মহাদেব রায় এর পরিবার তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে। ডিসিস্ট সুলতানা আক্তার রত্না গ্রেফতারকৃত মহাদেব রায় এর অন্যত্র বিয়ে ঠিক করার বিষয়টি জানতে পেরে তাকে পালিয়ে গিয়ে বিবাহের জন্য পীড়াপীড়ি করে। ঘটনার দিন মহাদেব রায় অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ডিসিস্টকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে
তাদের মধ্যে পালিয়ে বিয়ে করার বিষয়ে মতানৈক্য ও ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী মহাদেব রায় ডিসিস্ট সুলতানা আক্তার রত্নাকে তার পরনে থাকা উড়না গলায় পেঁচিয়ে নৃশংসভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মরদেহ ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায় মর্মে স্বীকার করেন।
মন্তব্য করুন