বরিশাল জেলা প্রতিনিধি
তরিকুল ইসলাম (বাপ্পি)
বরিশাল সদর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জেবুন্নেছা আফরোজকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে বরিশাল মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান এই আদেশ দেন। শুনানিকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে বিচারক তা খারিজ করে দেন। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার গুরুত্ব ও প্রমাণ উপস্থাপন করলে আদালত তা আমলে নেন।
এর আগে, গত ১৬ মে রাতে রাজধানী ঢাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরদিন (১৭ মে) ঢাকার ভাটারা থানার একটি হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন।
সোমবার বরিশালে দায়েরকৃত আরেকটি মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বরিশালের ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর বরখাস্ত হওয়া যুগ্ম সদস্য মারজুক আব্দুল্লাহর দায়ের করা একটি বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়। মামলার তদন্তকারী সংস্থা রাষ্ট্রপক্ষে শোন অ্যারেস্টের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন এবং লিখিত প্রতিবেদন যাচাই শেষে দৃশ্যমান গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “জেবুন্নেছা আফরোজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা রয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে শোন অ্যারেস্টের আবেদন করা হয়। আদালত যথাযথ নথিপত্র পর্যালোচনা করে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, “জেবুন্নেছা আফরোজ বর্তমানে একাধিক মামলার আসামি। বরিশালের আলোচিত এই বিস্ফোরক মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে। আদালতে সেসব উপস্থাপন করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন।”
জানা গেছে, মারজুক আব্দুল্লাহ বরিশালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও কিছু রাজনৈতিক ঘটনার জেরে তিনি বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজকে অভিযুক্ত করা হয়।
এদিকে জেবুন্নেছার আইনজীবীরা মামলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছেন। তারা বলেন, “তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।” তারা উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন